ইনকিলাব মঞ্চের শহীদি সমাবেশ নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগের বিচার দাবি

নবযাত্রা ডেস্ক

1000185158
ইনকিলাব মঞ্চের শহীদী সমাবেশ

সংস্কার ও নির্বাচনের প্রক্রিয়া চলতে বাধা নেই। তবে আগে জুলাই অভ্যুত্থানসহ বিগত সাড়ে ১৫ বছরের গুম-খুন, গণহত্যার দায়ে আওয়ামী লীগের বিচার ও নিষিদ্ধ করার দাবি জানিয়েছেন শহীদ পরিবারের সদস্যরা।

গতকাল শুক্রবার রাজধানীর শাহবাগে ইনকিলাব মঞ্চ আয়োজিত ‘জুলাই, পিলখানা, শাপলা গণহত্যার বিচার এবং গণহত্যাকারী আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ’ দাবিতে শহীদি সমাবেশে এসব কথা বলেন তারা। এ সময় সরকারের কাছে শহীদ পরিবার ও আহতদের পুনর্বাসনের দাবি জানানো হয়।

সমাবেশ থেকে চার দাবি উত্থাপন করে ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান বিন হাদি এগুলো পূরণে ১০০ দিনের আলটিমেটাম দেন। দাবি পূরণ না হলে আগামী ৫ আগস্ট (৩৬ জুলাই) ‘মার্চ ফর বাংলাদেশ’ কর্মসূচি পালন করবে বলে জানান তিনি।

দাবিগুলো হলো– আগামী ১০০ দিনের মধ্যে জুলাই গণহত্যার দৃশ্যমান বিচার শুরু, আওয়ামী লীগকে নির্বাহী আদেশ, আদালতের রায় ও রাজনৈতিক সমঝোতার মাধ্যমে সাংবিধানিকভাবে নিষিদ্ধ, শাপলা চত্বরের ঘটনার স্বীকৃতি দিয়ে জাতিসংঘের সহায়তায় একটি তদন্ত কমিশন গঠন করে শহীদদের তালিকা প্রকাশ ও বিচার প্রক্রিয়া শুরু; পিলখানা হত্যাকাণ্ড নিয়ে গঠিত কমিশনের পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন প্রকাশ করে সুপারিশমালা বাস্তবায়ন এবং সব রাজনৈতিক দলের নির্বাচনী ইশতেহারে আওয়ামী লীগের গণহত্যার বিচারের বিষয়ে স্পষ্ট ধারা অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।

সমাবেশে শহীদ সাজ্জাদ হোসেন সজলের মা শাহিনা বেগম বলেন, ‘আমার ছেলেকে আশুলিয়ায় ভ্যানের ওপর যখন পুড়িয়ে দেওয়া হয়, তখনও জীবিত ছিল। এসব হত্যাকাণ্ডের দায়ে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে হবে।’

শহীদ সাইমের মা বলেন, ‘আমার বুকটা শূন্য করে দিয়েছে। ঈদ গেল, আমি করতে পারি নাই। বুকে রক্তক্ষরণ হলেও ছেলে হত্যার বিচার পাইনি। স্বৈরাচার হাসিনাকে দেশে এনে ফাঁসি দেওয়া হোক।’

শহীদ ইমাম হাসানের ভাই বলেন, ‘অভ্যুত্থানের সরকার ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় কেন আমাদের রাস্তায় দৌড়াতে হবে? সংস্কার হবে, নির্বাচনও হবে। এর আগে আওয়ামী লীগের বিচার করতে হবে।’

শহীদি সমাবেশে সরকারের উদ্দেশে জাতীয় নাগরিক পার্টির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেন, ‘সংস্কার না নির্বাচন, আপনারা এ খেলা বাদ দিয়ে বিচার নিশ্চিত করুন। জুলাই অভ্যুত্থানে হত্যাকাণ্ডের বিচারের আগে এ দেশে কোনো কিছু প্রাসঙ্গিক হতে পারে না।’ তিনি অভিযোগ করেন, ‘আমরা যখনই তাদের কাছে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের কথা বলি, তারা আমাদের পশ্চিমাদের দৃষ্টিভঙ্গির দোহাই দেয়। যখন শাপলা চত্বর, পিলখানা ও জুলাইয়ে হাজারো মানুষ হত্যা করা হয়েছিল, তখন পশ্চিমাদের দৃষ্টিভঙ্গি কোথায় ছিল?’

সমাবেশে বক্তৃতা করেন আপ বাংলাদেশের সংগঠক আলী আহসান জুনায়েদ, ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের সেক্রেটারি শেখ মাহবুবুর রহমান প্রমুখ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *