নবযাত্রা ডেস্ক
বিশ্বের সবচেয়ে বায়ু দূষিত দেশের তালিকা প্রকাশ করেছে বায়ুদূষণ ও বায়ু পরিশোধন প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করা সুইস সংস্থা আইকিউ এয়ার। সদ্য প্রকাশিত রিপোর্টে দূষিত তালিকায় প্রথমেই উঠে এসেছে বাংলাদেশের নাম।
২০২১ সালে বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত দেশের তালিকায় বাংলাদেশসহ পাঁচটি দেশের নাম এসেছে। অন্য চারটি দেশ হলো শাদ, পাকিস্তান, তাজিকিস্তান ও ভারত। বাংলাদেশের ঢাকা, শাদের এনজামেনা, তাজিকিস্তানের দুশানবে, ওমানের মাস্কাট এবং ভারতের নয়াদিল্লি টানা চতুর্থ বছরের মতো বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত রাজধানী শহর। বায়ুদূষণ ও বায়ু পরিশোধন প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করা সুইস সংস্থা আইকিউএয়ার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, সবচেয়ে কম শ্বাস-প্রশ্বাসের উপযোগী বাতাস ছিল ঢাকায়। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা বায়ুমানের ক্ষেত্রে বিশ্বের দ্বিতীয় খারাপ শহরের তালিকায় রয়েছে। প্রতিবেদনটি ১১৭টি দেশ, ছয় হাজার ৪৭৫ অঞ্চল এবং স্থলভিত্তিক বায়ুর গুণমান পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র থেকে বায়ুদূষণ ডেটার ওপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছে।
সুইস এই সংস্থার মতে, বাংলাদেশের বায়ুতে প্রাণঘাতী পার্টিকুলেট ম্যাটার বা পিএম-২.৫-এর উপস্থিতি প্রতি ঘনমিটারে ছিল ৭৬ দশমিক ৯ শতাংশ, যা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বেঁধে দেওয়া সীমার চেয়ে কয়েক গুণ বেশি। এর আগে ২০১৮, ২০১৯ ও ২০২০ সালে বাংলাদেশে পিএম-২.৫-এর উপস্থিতি প্রতি ঘনমিটারে ছিল যথাক্রমে ৯৭.১, ৮৩.৩ ও ৭৭.১ মাইক্রোগ্রাম।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২১ সালে মধ্য ও দক্ষিণ এশিয়ায় বিশ্বের সবচেয়ে খারাপ বায়ুর গুণমান ছিল এবং বিশ্বের ৫০টি সবচেয়ে দূষিত শহরের মধ্যে ৪৬টি এই অঞ্চলের আওতাভুক্ত।
২০২১ সালে চীনে বায়ুর গুণগতমান উন্নত হয়েছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। শুদ্ধ বায়ুমানের শীর্ষে রয়েছে নেদারল্যান্ডসের সাবা দ্বীপ, আফ্রিকার কেপ ভার্দে দীপপুঞ্জ, ক্যারিবিয়ান দ্বীপরাষ্ট্র পুয়ের্তো রিকো ও দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরের নিউ ক্যালিডোনিয়া দ্বীপপুঞ্জ।
মঙ্গলবার এ সমীক্ষা প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে বলে জানায় রয়টার্স।

সমীক্ষায় দেখা গেছে, একটি দেশও ২০২১ সালে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) প্রত্যাশিত বায়ুমানের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে পারেনি।
গত বছর ডব্লিউএইচও তার বায়ুমান নির্দেশক গাইডলাইন পরিবর্তন করে। সেই সময় সংস্থাটি জানায়, পিএম২.৫ নামে পরিচিত ছোট ও বিপজ্জনক বায়ুবাহিত কণার গড় বার্ষিক ঘনত্ব প্রতি ঘনমিটারে ৫ মাইক্রোগ্রামের বেশি হওয়া উচিত নয়। তবে এর চেয়ে কম ঘনত্বও উল্লেখযোগ্য স্বাস্থ্যঝুঁকির কারণ বলে জানায় ডব্লিউএইচও।
সুইজারল্যান্ডের দূষণ প্রযুক্তি সংস্থা আইকিউএয়ারের সমীক্ষায় উঠে এসেছে, জরিপ করা শহরগুলোর মধ্যে মাত্র তিন দশমিক ৪ শতাংশ শহর ২০২১ সালের লক্ষ্যমাত্রা পূরণে সক্ষম হয়েছে। তবে ৯৩ শহরে পিএম২.৫ এর মাত্রা প্রস্তাবিত স্তরের চেয়েও ১০ গুণ বেশি।