বেকারি ব্যবসার আড়ালে চাঁদাবাজি দুলালের

প্রতি মাসে ২৫-৩০ লাখ টাকা চাঁদা

তোলে পুলিশের র্সোস নামধারী দুলাল।

নিজস্ব প্রতিবেদক
বেকারি ব্যবসার আড়ালে পুলিশের নাম ভাঙ্গিয়ে চাঁদাবাজি করে দুলাল। নগরীর প্রবর্তক মোড় থেকে অলিখাঁ মসজিদ পর্যন্ত এবং কাতালগঞ্জ ১ নম্বর রোডের মুখ পর্যন্ত সড়ক দখল করে প্রায় ১৪০টি অবৈধ ভাসমান দোকান থেকে প্রতিদিন লাখ টাকা চাঁদা তুলছেন পুলিশের সোর্স নামধারি দুলাল।
ভাসমান হকারদের সাথে কথা বলে জানা যায়, দুলাল পুলিশের নাম ভাঙ্গিয়ে প্রতিদিন এখান থেকে চাঁদা আদায় করে। টাকা দিতে দেরি হলেই পুলিশ দিয়ে হয়রানি করায় হকারদের।
ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করে বলেন, এখান থেকে প্রতি মাসে অন্তত ২৫-৩০ লাখ টাকা চাঁদা তোলেন। মূলত দুলাল পাঁচলাইশ থানা ও চকবাজার থানা এ দুই থানার পুলিশের র্সোস বলে পরিচয় দিয়ে টাকা আদায় করে। প্রতিদিন একটি দোকান থেকে ২০০-২৫০ টাকা করে চাঁদা আদায় করে। চাঁদা দিতে অস্বিকার করলে পুলিশ দিয়ে দোকান ভেঙ্গে দেয়। পূণরায় ২০-৩০ হাজার টাকার বিনিময়ে আবার ব্যবসা করার সুযোগ দেয়।
সরেজমিন পরিদর্শনে দেখা যায়, প্রবর্তক মোড় থেকে চকবাজার অলি খাঁ মসজিদের মোড় পর্যন্ত ৮১টার বেশি দোকান বসে ও চকবাজার থেকে কাতালগঞ্জ পর্যন্ত ৬০টির বেশি ভাসমান দোকান আছে। এমন ব্যস্ততম সড়কে ফুটপাত ও সড়ক দখল করে অনায়েশে ব্যবসা করছেন হকাররা। এছাড়া মেডিকেলের প্রধান গেট দিয়ে যাতায়াত করে ডাক্তারসহ গুরুত্বপূর্ণ রোগীরা। কিন্তু সড়ক ও ফুটপাত দখল করে অবৈধভাবে ব্যবসার কারণে প্রতিদিনই যানজটের সৃষ্টি হয়। এ যানজটে ভুগতে হচ্ছে রোগীসহ সাধারণ মানুষ। দেখা যায় ফুটপাত দখল করে প্রায় ১৪টার বেশি ফলে দোকান বসেছে, সাইকেলে গ্যারেজ আছে ৪ থেকে ৫টা, চা’র টং আছে প্রায় ২০-৩৫টার বেশি, এছাড়া কাপড়ের দোকান, প্লাস্টিকের অন্যান্য দোকানসহ একাধিন ভাসমান দোকান রয়েছে। মেডিকেলের প্রধান ফটকের পাশে অবৈধভাবে যাত্রীছাউনি দখল করে ব্যবসা করছেন আক্কাস নামের এক ব্যক্তি। একটি সূত্রে জানা যায়, আক্কাস পুলিশের সোর্স নামধারি দুলালের সহযোগিতায় যাত্রীছাউনি দখল করে চায়ের দোকান দিয়েছে। পাশে রাখেনি কোনো হাটার জায়গা। যারকারণে রাস্তা পারাপারে দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে পথচারিকে। আক্কাস দৈনিক ৩০০-৩৫০ টাকা চাঁদা দিয়ে ব্যবসা করছেন।
একইভাবে কথা বললে ভাসমান হকাররা জানায়, পুলিশের সোর্স দুলালকে চাঁদা দিয়ে টাকার বিনিময়ে ব্যবসা করছি।
দুলালের সাথে কথা বলতে তার মুঠোফোনে কল দিলে তাকে পাওয়া যায় না। তবে ঘটনার সত্যতা মিলেছে একাধিক সূত্রে। এসময় কৌশলে তার চাঁদা তোলার কথা তিনি অস্বীকার করেন। কিন্তু পরোক্ষে আবার টাকা তুলার কথা অস্বীকার করেন তিনি। বলেন, আমাকে ফাঁসানো হচ্ছে।

বাবাকে নিয়ে হাটহাজারী থেকে আসেন মোস্তাক মিয়া। তিনি বলেন মেডিকেল এলাকায় ফুটপাতের জন্য চলা যায় না। এমন জন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে এমনটা হলে কি করে চলবে? প্রশাসনের নজর দেয়া দরকার।

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. শামীম আহসান বলেন, রোগীদের প্রয়োজনে মেডিকেল এলাকা ফুটপাত দখল মুক্ত রাখার চেষ্টা করি। এ ফাঁকে কেউ যদি অনৈতিক কাজ করে তার প্রমাণ মিললে আইনি ব্যবস্থা করবো।

পাঁচলাইশ থানার ওসি সন্তোষ চাকমা পুলিশের সোর্স নয় দুলাল অস্বীকার করে এ বিষয়ে বলেন, আমি মাত্র একমাস হয়েছে এ থানায় এসেছি। দুলাল নামের কার সম্পর্কে আমার জানা নেই। যেহেতু অভিযোগ উঠেছে তবে ঘটনা তদন্ত করে দেখা হবে। সত্যতা পেলে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।

চকবাজারে ওসি মনজুর কাদের বলেন, দুলাল নামের আমাদের কোনো সোর্স নেই। যে পুলিশের সোর্স বলে পরিচয় দিচ্ছেন সে ভুয়া। খোঁজ লাগানো হচ্ছে। ধটনা সত্য হলে তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *