নবযাত্রা প্রতিবেদন
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে নিজেদের অবস্থান শক্ত করতে কর্মকৌশলে পরিবর্তন আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কওমি মাদ্রাসাভিত্তিক সংগঠন হেফাজতে ইসলাম।
এ জন্য সম্প্রতি রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেছেন সংগঠনটির শীর্ষ নেতারা। কেন্দ্রীয় কমিটি গঠনের প্রায় সাড়ে ৯ মাস পর অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে সংগঠনকে পুনর্গঠিত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সংগঠনটির কারাবন্দি নেতাদের মুক্ত করতে পাঁচ সদস্যের একটি সাব-কমিটি গঠন করেছে হেফাজতে ইসলাম।পাশাপাশি জাতীয় নির্বাচনের আগেই সারাদেশে ইউনিয়ন, থানা ও জেলা পর্যায়ে কমিটি গঠন করতে চান তাঁরা। একই সঙ্গে ‘ইসলামী আইন বাস্তবায়ন’ নামে নতুন আরেকটি প্ল্যাটফর্মও গঠন করা হয়েছে। এতে কওমি মাদ্রাসার সাবেক শিক্ষার্থীদেরও সংগঠিত করা হচ্ছে।
গত বছরের ৭ জুন ৩৩ সদস্যের কেন্দ্রীয় কমিটি গঠন করে হেফাজতে ইসলাম। এরপর চলতি বছরের ২৩ মার্চ প্রথম চট্টগ্রামের ফটিকছড়িতে জামিয়া ইসলামিয়া আজিজুল উলুম বাবুনগর মাদ্রাসায় অনুষ্ঠিত সভায় ৩৩ সদস্যের কেন্দ্রীয় কমিটি আরও বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন নেতারা। সভায় মাওলানা ফোরকানুল্লাহ ও মাওলানা মোবারকুল্লাহকে হেফাজতের কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির করা হয়। নীতিনির্ধারণী বৈঠক করেন সভাপতিত্ব করেন হেফাজতে ইসলামের আমির মুহিবুল্লাহ বাবুনগরী।
সাংগঠনিক শক্তি বাড়িয়ে সরকারকে একটা নতুন বার্তা দিতে চায় হেফাজতে ইসলাম। আর এই বার্তা দিয়ে তারা মুক্ত করতে চায় কারাবন্দি সব আলেমকে।
হেফাজত নেতারা জানিয়েছেন, দেশের বিভিন্ন ইস্যুতে এখন থেকে নিজেদের অবস্থান তুলে ধরবে হেফাজত। এরই অংশ হিসেবে কাদিয়ানি সম্প্রদায়ের সাম্প্রতিক তৎপরতায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে সংগঠনটি। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বৃদ্ধি নিয়েও কথা বলছে সংগঠনটি। এ ছাড়া গত বৃহস্পতিবার আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দিয়ে তারা গণকমিশনের প্রতিবাদ জানিয়েছে। এক বিবৃতিতে হেফাজত আমির মুহিবুল্লাহ বাবুনগরী বলেন, ‘আমরা আজ ঘাদানিকের সমন্বয়ে গঠিত তথাকথিত গণকমিশনের করা অভিযোগ সম্পর্কে জানতে পেরেছি। এই ভুঁইফোঁড় সংগঠনটি বরাবরের মতোই নিজেদের ইসলামবিদ্বেষী চেহারা জাতির সামনে উন্মোচিত করেছে। তাদের এই শ্বেতপত্র যে সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন, বানোয়াট এবং মিথ্যা তথ্যে ভরপুর, এটি সমগ্র দেশবাসীর সামনে দিবালোকের ন্যায় পরিস্কার।’
প্রসঙ্গত, জঙ্গি অর্থায়ন ও দেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টে কাজ করছে এমন অভিযোগ এনে ১১৬ ধর্মীয় বক্তার একটি তালিকা দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) জমা দিয়েছে মৌলবাদী ও সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাস তদন্তে গঠিত ‘গণকমিশন’। এর বিরুদ্ধে সরব হয়েছে হেফাজতে ইসলাম।