নবযাত্রা ডেস্ক
সবাইকে কাঁদিয়ে অবশেষে না ফেরার দেশে চলে গেলেন ১০ দিন আগে চট্টগ্রামে হাসপাতালে বিয়ে হওয়া ক্যানসার আক্রান্ত ফাহমিদা কামাল (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ২৭ বছর। বিয়ের পর স্বামীকে নিয়ে ঘর বাঁধার স্বপ্ন সার্থক হলো না তার।
গত ৯ মার্চ চট্টগ্রামে হাসপাতালে ক্যান্সার আক্রান্ত প্রেমিকা ফাহমিদা কামালকে বিয়ে করে ভালোবাসার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন প্রেমিক মাহমুদুল হাসান। বিয়ের ১২ দিনের মাথায় মৃত্যুর কাছে হার মানলেন ফাহমিদা।
ফাহমিদা মরণব্যাধি ক্যান্সারে আক্রান্ত ও মুমূর্ষ জেনেও মাহমুদুল হাসান বিয়ে করেন তাকে। মূলত, দীর্ঘ দিন ধরে ফাহমিদাকে তিনি ভালোবাসতেন। ফাহমিদাও তাকে ভালোবাসতেন। অবশেষে বিয়ের মাধ্যমে এ প্রেমের সম্পর্ককে একটি যৌক্তিক পরিণতি দেন তারা। জীবনের শেষ সময়ে স্ত্রী ফাহমিদার জীবন রক্ষার্থে আপ্রাণ চেষ্টা করেছেন স্বামী মাহমুদুল হাসান। তাকে সব সময় দেখা গেছে স্ত্রীর সেবা-শুশ্রুষা করতে। বিয়ের পর তিনি মূলত ওই হাসপাতালেই অবস্থান করছিলেন।
পড়াশোনার সময়ই হাসান ও ফাহমিদার পরিচয় হয়। এরপর তারা ক্রমশ প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। হাজারো বাধার মধ্যেও তাদের সম্পর্ক অটুট থাকে।
ফাহমিদার মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়। এ সময় আত্মীয়-স্বজনরা ভিড় করেন ফাহমিদাকে এক নজর দেখতে। এদিকে ফাহমিদাকে হারিয়ে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েন ফাহমিদার স্বামী মাহমুদুল হাসান।
ফাহমিদা কামাল দীর্ঘদিন ক্যান্সারে আক্রান্ত ছিলেন। ভারতেও চিকিৎসা নিয়েছেন। কিন্তু সেখানকার চিকিৎসকেরা আশা ছেড়ে দেওয়ায় ফাহমিদাকে দেশে নিয়ে আসা হয়।
নগরের মেডিকেল সেন্টারে ফাহমিদাকে বেনারসি পরিয়ে, বউ সাজিয়ে ১ টাকা কাবিনে বিয়ে করেন মাহমুদুল হাসান। মাহমুদুল হাসান কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার ফাসিয়াখালী ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান আজিজুল হকের ছেলে। নর্থসাউথ ইউনিভার্সিটি থেকে বিবিএ (অনার্স) এমবিএ পাস করা মাহমুদুল হাসানের পরিবার অনেকটা উচ্চবিত্ত।
আর ফাহমিদা চট্টগ্রামের চর চাক্তাই এলাকার বিশিষ্ট ব্যবসায়ী কামাল উদ্দীনের মেয়ে। তিনি আইইউবি থেকে বিবিএ ও এমবিএ শেষ করেন।
তাদের এ বিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার হলে তা ব্যাপক ভাইরাল হয়। এ বিয়ের ঠিক ১০ দিন পর সবাইকে কাঁদিয়ে না ফেরার দেশে চলে যান ফাহমিদা।