নবীন-প্রবীণের মিলনমেলা শিল্পকলার প্রাঙ্গণ

উচ্চারক’র ২১ বছর পূর্তি

নিজস্ব প্রতিবেদক

‘উচ্চারক আবৃত্তি কুঞ্জ’ একটি স্মৃতির নাম। ভালোবাসা ও অসাম্প্রদায়িক চেতনার নাম। এমন ভালোবাসায় ভরা কণ্ঠে এক নিশ্বাসে কথাগুলো বলেন ‘উচ্চারক আবৃত্তি কুঞ্জ’র সভাপতি ফারুক তাহের।

আলাপকালে উচ্চারক’র কাটানো ২১ বছরের নানান স্মৃতিচারণ করেন তিনি। হাঁটি হাঁটি পা পা করে ২২ বছরে পদার্পণ করেছে সংগঠনটি। সুদীর্ঘ এ পথ চলার নানান স্মৃতি আর জমকালো আয়োজনের মধ্যনিয়ে গতকাল শুক্রবার জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে উচ্চারক ২১ বছর পূর্তি উপলক্ষে দু’দিনের একটি উৎসবের আয়োজন করে। প্রথম দিনটি সাজানো হয়েছে আবৃত্তি, নাচ, গান আর অতিথিদের কথামালায়।

এযেন স্মৃতিতে মুখর শিল্পকলার প্রাঙ্গণ। নবীন-প্রবীণের এক মিলনমেলায় পরিণত হয়েছে। আজকের এ সংগঠনটির পেছনে আছে অনেকের অক্লান্ত পরিশ্রম। চট্টগ্রামের সেরা কয়েকটি আবৃত্তি সংগঠনের মধ্যে এটি একটি।

‘বুকে বাজে দ্রোহের বাণী, মুখে সত্য উচ্চারণ-আমরা মুক্ত উচ্চারক’ এই শিরোনামে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। প্রথমেই অনুষ্ঠিত হয় আলোচনা সভা। সভাপতি ফারুক তাহেরের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন দৈনিক আজাদী সম্পাদক এম এ মালেক। অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন আবৃত্তি শিল্পী জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায়। বিশেষ অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের ভাইস প্রেসিডেন্ট মনজুর কাদের মনজুর।

দৈনিক আজাদী সম্পাদক এম এ মালেক বলেন, একুশের সঙ্গে বাঙালি জাতির সম্পর্ক অবিচ্ছেদ্য। বাঙালির ইতিহাস ও ঐতিহ্যের সঙ্গে একুশের ভাষা শহীদদের রক্ত লেগে আছে। তাই বাংলা ভাষাকে শুদ্ধরূপে সর্বত্রই চর্চা করতে হবে। উচ্চারক তাদের কর্মে সেই একুশ সংখ্যাকে পার করে আজ সামনে এগিয়ে যাচ্ছে।

জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায় বলেন, উচ্চারক এক এক করে নিয়ত কাজের মধ্য দিয়ে আজ একুশ পেরিয়েছে। তাদের গঠনমূল চর্চা ও কর্মে বেশ প্রশংসিত। তাদের বিষয়ভিত্তিক প্রযোজনার মধ্যদিয়ে এদেশের গোড়ার কথা উঠে আসে।

সন্ধ্যায় মুক্তমঞ্চের আলোচনা পর্বে ছিলেন কবি ও সাংবাদিক ওমর কায়সার, কবি ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মালেক মুস্তাকিম, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক মাছুম আহ্মেদ ও উৎসবের যুগ্ম আহবায়ক সজল চৌধুরী।

অতিথিরা উচ্চারক’এর সুদীর্ঘ পথচলাকে আরও উৎসাহ দিয়ে বলেন, কোনো বাঁধাই যেন সামনে এসে দাঁড়াতে না পারে। এতোদিন যেভাবে আলো ছাড়িয়েছে আগামীতেও সকল বাঁধা অতিক্রম করে সামনে এগিয়ে যাবে।

এরপর মিলনায়তনে দর্শনীর বিনিময়ে প্রদর্শিত হয় উচ্চারকের চারটি পূর্ণাঙ্গ শ্রুতি প্রযোজনাÑ ‘মন ও মানচিত্রের বিভাজন, চর্যায় অর্চনা, নুরুন্নেহা ও কবরের কথা এবং সীমান্ত’। আমন্ত্রিত আবৃত্তি ও শ্রুতিশিল্পীরা একক ও দলীয় আবৃত্তি পরিবেশন করেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *