ঈদকে কেন্দ্র করে প্রন্তুত নগরীর বিনোদন কেন্দ্রগুলো

নবযাত্রা প্রতিবেদক


ঈদকে কেন্দ্র করে এরমধ্যে নানা রকম প্রস্তুতি নিচ্ছে নগরীর সবগুলো বিনোদন স্পট। চট্টগ্রাম নগরীতে উন্মুক্ত বিনোদন স্পট ও দর্শনীর বিনিময়ে বিনোদন স্পটসহ প্রায় ৮টির বেশি বিনোদন স্পট রয়েছে। বিনোদন স্পটগুলোর মধ্যে উল্লেখ্যযোগ্য হলো- পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত, বাটার ফ্লাই পার্ক, চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানা, ডিসি পার্ক আগ্রাবাদ কর্ণফুলী শিশু পার্ক, স্বাধীনতা কমপ্লেক্স পার্ক (মিনি বাংলাদেশ), আগ্রাবাদ-জাম্বুরি পার্ক, কাট্টলি সমুদ্র সৈকত ও সিআরবি শিরীষতরা।


এসব বিনোদন স্পটের মধ্যে দর্শনীর বিনিময়ে রয়েছে চারটি বিনোদন স্পট। সেগুলো হলো- চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানা, আগ্রাবাদ কর্ণফুলী শিশু পার্ক, স্বাধীনতা কমপ্লেক্স পার্ক (মিনি বাংলাদেশ) ও ডিসি পার্ক।


তবে এবারের কোরবানির ঈদ বর্ষা মৌসুমে পড়ায় বিনোদন স্পটে আশানুরূপ দর্শনার্থী হবে না বলেন মনে করছেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। এছাড়া রমজানের ঈদের চেয়ে কোরবানির ঈদে দর্শনার্থী প্রায় অর্ধে নেমে যায়।


চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানা: চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানার কিউরেটর ডা. শাহাদাত হোসের শুভ বলেন, ঈদে দর্শনার্থীদের জন্য প্রস্তুতি চলছে। চিড়িয়াখানার পশু-পাখিদের খাঁচা, দেয়াল ও সিঁড়ি রমজানের ঈদেই রং করা হচ্ছে। এখন আবার পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা হচ্ছে। এছাড়া রমজানের ঈদের মতই দর্শনার্থীদের জন্য বিশেষ আকর্ষণ হচ্ছে জলহস্তি। চিড়িয়াখানায় জলহস্তি আসার পর এ দু’টি ঈদ পেয়েছে। আবার তিন মাস আগে যে তিনটা ভাগ শাবকের জন্ম হয়েছে। সেগুলোও দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে।


তিনি বলেন, চিড়িয়াখানায় ধারণ ক্ষমতা পাঁচ থেকে সাড়ে পাঁচ হাজার মানুষ। কিন্তু প্রতি বছরই ধারন ক্ষমতার চেয়ে বেশি দর্শনার্থী হয়। কিন্তু এবার কোরবানির ঈদ পড়েছে বর্ষা মৌসুমের মধ্যে। তাই দর্শনার্থী অন্যান্যবারের চেয়ে কমই হতে পারে। আবার কোরবানির ঈদে এমনিও রমজানের ঈদের চেয়ে দর্শনার্থী কম হয়। তবে আমরা পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা রেখেছি। সিসি ক্যামেরার আওতায় পুরো চিড়িয়াখানাকে রাখা হয়েছে। আশা করি কোনো রকম অনাকাক্ষিক ঘটনা ঘটবে না। চিড়িয়াখানা খোলা থাকবে সকাল ৯টা থেকে রাত ৭টা পর্যন্ত।


ডিসি পার্ক: শহর থেকে একটু বাইরে অবস্থি ডিসি পার্ক। প্রাকৃতিক পরিবেশে কিছু সময় কাটাতে চাইলে ডিসি পার্কের কোনো বিকল্প নেই। এখানে টিকেট মূল্য ৩০ টাকা রাখাচ্ছে।


আগ্রাবাদ কর্ণফুলী শিশুপার্ক: আগ্রাবাদ কর্ণফুলী শিশুপার্কের পরিচালক মো. জুয়েল বলেন, ঈদে আমাদের বিশেষ আক্রর্ষণ হচ্ছে নতুন ড্রাগন রাইড। যেটি রমজানের ঈদের সময় দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে। এবারও শিশুদের জন্য তাই থাকছে। এছাড়া এখানে সব মিলে আরও ৪০টি রাইড আছে। যেগুলোতে শিশু-কিশোর ও তরুণরা উপভোগ করতে পারবেন। পার্কে প্রবেশ মূল্য রাখা হয়েছে ৪০ টাকা এবং ভেতরের প্রতিটি রাইডের মূল্য ৪০ টাকা রাখা হয়েছে। এ পার্কের ধারন ক্ষমতা ১৫-২০ হাজার মানুষ। তবে কোরবানির ঈদে দর্শনার্থী কমই হয়। এছাড়া আমরা পার্ক কর্তৃপক্ষ প্রতিবারই একটি উদ্যোগ নিই। সেটি হচ্ছে বিভিন্ন এতিমখানা, স্কুল ও মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের জন্য ৫০ শতাংশ ডিস্কাউন্ট দেয়া হয়। আবার পথশিশুদের জন্য সম্পুন্ন বিনামূল্যে পার্কে প্রবেশের ব্যবস্থা রাখা হয়। এবারও তাই রয়েছে।


তিনি আরও বলেন, পুরো পার্ক জুড়ে সিসি ক্যামরা রয়েছে, আমাদের নিজস্ব নিরাপত্তা কর্মী রয়েছে এছাড়া আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহযোগিতাও থাকবে। পার্ক খোলা থাকবে সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত।


স্বাধীনতা কমপ্লেক্স (মিনি বাংলাদেশ): স্বাধীনতা কমপ্লেক্স জেনারেল ম্যানেজার মো. আলী জনী বলেন, নগরীর চাঁন্দগাঁও এলাকায় অবস্থি স্বাধীনতা কমপ্লেক্সে আসা মানেই এক জায়গায় পুরো বাংলাদেশকে দেখা। এখানে বাংলাদেশের শিকড় রয়েছে। এরমধ্যে আমাদের ঈদের প্রস্তুতিও ভালোভাবে নেয়া হয়েছে। পার্কের বিভিন্ন স্থানে রং করা হয়েছে। সেসব মেরামত করা হচ্ছে।

এখানে আটটি রাইড আছে। এখানে টাওয়ারসহ প্রবেশ মূল্য ২শ’ টাকা রাখা হচ্ছে। শিশুদের জন্য ১৫০ টাকা রাখা হচ্ছে। ২শ’ টাকা টিকেটের সাথে দুটি রাইড ফ্রি দেয়া হচ্ছে। এরমধ্যে একটা হচ্ছে টাওয়ারের উপরে ঘুনায়মান রেস্টুরেন্টে যেতে পারবে এবং পাইরেট শিপ রাইডে ঘুরতে পারবে। এছাড়া টাওয়ারের উপরে থ্রি-ডি আর্ট গ্যালারি আছে। যেখানে দর্শনার্থীরা বিভিন্নভাবে ছবি তুলতে পারবে। পার্ক সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত খোলা থাকবে।


বাটারফ্লাই পার্ক: ইন্ট্রাকো গ্রুপের বাটারফ্লাই পার্ক এডমিন ইন্দ্রজিৎ আচার্য বলেন, রমজানের ঈদেই নতুন দুইটি রাইড যোগ করা হয়েছে। সেগুলো আছে। এরমধ্যে একটি পানিতে ঘুরার বোর্ড, আরেকটি ট্রেন রাইড। এ দুই রাইডে টিকেট ৫০ টাকা। সব মিলে এখানে মোট ৮টি রাইড আছে। বাকি রাইডগুলো ফ্রি থাকে সবার জন্য। পার্কের টিকেট মূল্য রাখা হয়েছে ১শ’ টাকা এবং বাচ্চাদের জন্য রাখা হচ্ছে ৫০ টাকা।


এছাড়া আগ্রাবাদ-জাম্বুরি পার্কসহ উন্মুক্ত স্থানের পার্কগুলো সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত থাকবে। এ দুই স্থান খোলা থাকবে সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *