চট্টগ্রাম মেডিকেলে পুলিশের চাঁদাবাজিতে অতিষ্ঠ সাধারণ হকাররা

নবযাত্রা প্রতিবেদক

পুলিশের চাঁদাবাজির জ্বালায় অতিষ্ঠ চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ এলাকার ফুটপাতের হকাররা। চাঁদা দিলেই সাচ্ছন্দে করা যাচ্ছে ব্যবসা। চাঁদার টাকা না দিলেই চলে নানারকম হয়রানি। কখনো এসে ছিনিয়ে নিয়ে যায় হকারদের বিক্রিত পণ্য সামগ্রী কিংবা ভ্যানগাড়ি। আবার পুলিশের নামে হকারদের গায়ে হাত তোলার অভিযোগও রয়েছে। পরে মোটা টাকার বিনিময়ে ছিনিয়ে নেয়া পণ্যসামগ্রী ও ভ্যানগাড়ি উদ্ধার করতে হয় হকারদের। এভাবে প্রতিমাসে মেডিকেল এলাকার আশপাশের এক শতাধিক ভাসমান হকার থেকে প্রায় তিন লক্ষাধিক টাকার চাঁদা আদায় করেন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ এলাকার পুলিশ ফাঁড়ির সদস্যরা।

ভোক্তভূগীরা অভিযোগ করে বলেন, প্রতিদিনই পুলিশকে চাঁদা দিতে হয়। সামান্য বাদাম, পান বিক্রেতা, মুখের মাস্ক বিক্রেতাকেও ছাড় দেননা পুলিশের সদস্যরা। এভাবে প্রতিদিন আয়ের অর্ধেক টাকা পুলিশসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সদস্যদেরও চাঁদা দিতে হয় । তবুও শান্তিতে ব্যবসা করার সুযোগ নেই।

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ এলাকার এসব ব্যবসায়ীরা বলেন, আমরা সব সময় ব্যবসা করি না। মেডিকেল কর্তৃপক্ষ কিছু সময় নির্ধারণ করে দিয়েছেন। সেই সময়ই গাড়ি নিয়ে বসি। কিন্তু বসলেই পুলিশের উৎপাত বেড়ে যায়। তাদের থেকে রেহাই পেতে টাকা ঢালতে হয়। আবার একদিন টাকা কম দিলেই এসে নিয়ে যায় ভ্যানগাড়িসহ পণ্যসামুগ্রী।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক হকার অভিযোগ করে বলেন, আমি ডাব বিক্রি করি। গরীব মানুষ আমি। এখানের আয় দিয়ে সংসার চলে। আমার আয় খুবই সীমিত। সেই আয় থেকেই চাঁদা দিই। কিন্তু পুলিশ ইদানিং এতো বেশি চাঁদা দাবি করছেন যা আমার পক্ষে দেয়া সম্ভব হচ্ছে না। কম টাকা দিলেই পুলিশ ফাঁড়ির শাকিল নামের এক পুলিশ এসে আমার পণ্য কিংবা ভ্যানগাড়ি নিয়ে যায়। পরে অনেক টাকার বিনিময়ে তা ছাড়িয়ে আনতে হয়। আমাকে কোনোভাবেই ব্যবসা করতে দিচ্ছেন না।

ফল বিক্রেতা, বালিশসহ বিভিন্ন সামগ্রী বিক্রেতা, বেকারি পণ্য বিক্রেতা, চা দোকানদারসহ একাধিক হকার বলেন, পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ উপপরিদর্শক (এসআই) নুরুল আশেক যারা চাঁদা বেশি দেয় তাদের বসার সুযোগ দেন। যারা তার চাহিদা মত টাকা দিতে পারেন না তাদেরকেই তিনি হয়রানি করেন। এসময় অভিযোগকারি হকাররা আরো বলেন, আমার ফুটপাতে টাকা দিয়ে ব্যবসা করছি। তাহলে অবৈধ হয় কি করে। আর আমরা যদি কোনো কাজ করার সুযোগই না পাই তাহলেতো না খেতে পেয়ে মরবো পরিবার নিয়ে। এছাড়াও আমরা নির্ধারিত কিছু সময়ে ব্যবসা করতে বসি, সারা দিন নয়। যদি আমাদের ব্যবসা অবৈধ হয় তবে আমাদের পূর্ণবাসনের ব্যবস্থা করুক মেডিকেল কর্তৃপক্ষ। এর জন্য মেডিকেল পরিচালকের সুদৃষ্টি কামনা করছি।

উল্লেখ্য- এক এক ভ্যানগাড়ি থেকে গড়ে ৫০ থেকে ১০০ টাকা করে চাঁদা আদায় করে পুলিশ। আবার কারো কারো ক্ষেত্রে তারও বেশি টাকা দাবি করেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *