নবযাত্রা প্রতিবেদক
সিটি মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী বলেছেন, বর্ষা শুরুর আগে নগরীর সব খাল থেকে মাটি উত্তোলন করে জলজট সম্ভাবনা দূরীকরণে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। জলাবদ্ধতা নিরসনে মেগা প্রকল্পের যে কাজ চলছে এ কাজ বাস্তবায়নকারী সংস্থাকে দায়িত্ব নিয়ে আগামী বর্ষায় যাতে কোন ধরণের জলজট না হয় সে ব্যাপারে এখনই পদক্ষেপ নিতে হবে।
গতকাল সোমবার দুপুরে আন্দরিকল্লার পুরাতন নগর ভবনে কে.বি আবদুচ সাত্তার মিলনায়তনে চসিক ৬ষ্ঠ নির্বাচিত পরিষদের ১৪তম সাধারণ সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মো. রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে গিয়ে নিরপত্তা বেষ্টনী না থাকার ফলে জানমালের যে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা যাতে পুনরাবৃত্তি না হয় সেদিকে বাস্তবায়নকারী সংস্থাকে সর্তক দৃষ্টি রেখে কাজ করতে হবে। তিনি নগরীর মেগা প্রকল্পের আওতার বাইরে যে ২১টি খাল রয়েছে সে খালগুলোর সঠিক অবস্থান নির্ণয় ও সম্ভাব্যতা যাচাই করে প্রকল্পের ডিপিপি তৈরির নির্দেশনা প্রদান করেন। তিনি পরিচ্ছন্ন বিভাগের জনবলের ছবি সম্বলিত তালিকা প্রণয়ন ও ডিজিটাল হাজিরা নিশ্চিত করার নির্দেশনা দেন। এছাড়া ওয়ার্ড কাউন্সিলরদের পরিচ্ছন্ন, মশক নিধন, আলোকায়নের সার্বিক তত্ত¡াবধানের দায়িত্ব ওয়ার্ড ভিত্তিক স্ব স্ব কাউন্সিলরদেরকে গ্রহণ করে নিরবিচ্ছিন্নভাবে সেবা কার্যক্রম পরিচালনা করতে দায়িত্ব প্রদান করেন। তিনি সিটি কর্পোরেশনকে একটি সুশৃঙ্খল প্রতিষ্ঠানে রূপান্তরে প্রত্যেকের স্বীয় অবস্থানে থেকে কর্তব্য কর্ম সঠিকভাবে পালনের জন্য বিশেষভাবে নির্দেশ দেন। তিনি আগামী রমজান মাসকে সামনে রেখে নগরীকে পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখা, তারাবী নামাজের আগে প্রতিটি মসজিদে ফগার মেশিনের মাধ্যমে মশক নিধনের ঔষধ স্প্রে করা, ওয়াসা কর্তৃক কর্তনকৃত রাস্তা দ্রæত প্যাঁচওয়ার্কের মাধ্যমে মেরামত, নতুনভাবে কোন রাস্তা কর্তন না করা, নগরীতে নিরবিচ্ছিন্ন আলোকায়ন ব্যবস্থা নিশ্চিত করা এবং নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের মাধ্যমে বাজার মনিটরিং করা যাতে সাধারণ মানুষ যেন ভোগান্তিতে না পড়েন সেব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে সকলের প্রতি আহবান জানান।
চসিক ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী কর্মকর্তা ও সচিব খালেদ মাহমুদের সঞ্চালনায় প্যানেল মেয়র, কাউন্সিলর, সংরক্ষিত কাউন্সিলর ও বিভাগীয় প্রধানরা এতে বক্তব্য রাখেন।
এসময় মেয়র আরো বলেন, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের আয়ের উৎস হচ্ছে শুধুমাত্র গৃহকর ও ট্রেড লাইসেন্স। কিন্তু এমন অনেক খাত আছে যেখান থেকে কর আদায় করা যায়। সে খাতগুলো কার্যকর করে করের আওতা বৃদ্ধির জন্য রাজস্ব কর্মকর্তাকে নির্দেশনা প্রদান করেন। তিনি কর কর্মকর্তা, উপ কর কর্মকর্তা ও কর আদায়কারীদের কর আদায়ে নানা অসংগতি ও অদক্ষতা পরিলক্ষিত হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন এবং তাদের প্রাত্যহিক কর্মকান্ড সম্পর্কে প্রতিবেদন তৈরি করে ১৫দিনের মধ্যে পেশ করার নির্দেশনা দেন।
তিনি ভূ-সম্পত্তি বিভাগের কর্মকান্ডের প্রতি অসন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, সিটি কর্পোরেশনের অনেক সম্পত্তি এখানো বেহাত আছে। বারবার তাগাদা দেবার পরও ভূ-সম্পত্তি শাখা এব্যাপারে পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হয়েছে। তিনি জরুরী ভিত্তিতে একজন ভূ-সম্পত্তি কর্মকর্তা নিয়োগসহ পুরো শাখাকে ঢেলে সাজানোর নির্দেশনা প্রদান করেন।
তিনি বিদ্যুৎ বিভাগের নানা অনিয়ম অসংগতি দূর করার জন্য কাউন্সিলরদের সাথে সমন্বয় করে এখন থেকে দ্রæত পদক্ষেপ গ্রহণ করে নগরীতে পরিপূর্ণ আলোকায়নের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে কঠোর নির্দেশনা দেন।
মেয়র বলেন, নগরবাসীর মন জয় করতে না পারলে চসিকের এ পরিষদের সকল কর্মকান্ড ব্যর্থতায় পর্যবসিত হবে। সেজন্য প্রত্যেক কাউন্সিলরদের নিজেদের ওয়ার্ডের জনগণকে সন্তুষ্ট রাখতে যা যা প্রয়োজন সমস্ত সেবামূলক কাজগুলো সঠিকভাবে সম্পন্ন করে নিজেদের সুনাম অর্জনের পদক্ষেপ নিতে হবে বলে তিনি অভিমত ব্যক্ত করেন।