নারী- শিশুর পোশাকের বিশাল সমাহার মিমিতে

জান্নাতুল ফাহিম

বাহারি আলোক সজ্জায় সেজে উঠেছে নগরীর মিমি সুপার মার্কেটের ভেতর বাইর জুড়ে। আর বাইরে সারি সারি গাড়ি পার্কিং করা। ভেতরেও একই অবস্থা। সন্ধ্যার পর ক্রেতাদের আগমনে সরগরম হয়ে উঠেছে মার্কেটের প্রতিটি দোকান। শাড়ি, জামা, জুতা, টেইলার্স প্রতিটি দোকানেই বিভিন্ন বয়সী ক্রেতার ভীড়। ঈদ কেনাকাটায় এরমধ্যে জমজমাট হয়ে উঠেছে নগরীর অভিজাত শপিংমল মিমি সুপার মার্কেট। প্রবর্তক মোড়ে অবস্থিত এ শপিংমলটি বিশেষ করে উচ্চ মধ্যবিত্ত এবং উচ্চবিত্তের শপিংমল নামে বেশ সুপরিচিত। মার্কেটে নারী-পুরুষ সব বয়সীদের পোশাকের সমাহার থাকলেও বিশেষ করে নারী এবং শিশুদের সব ধরণের পোশাকআশাকে ভরপুর রয়েছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, গতকাল শুক্রবার ছুটির দিন হওয়ায় দিনভর চলেছে ঈদের কেনাকাটা। সন্ধার পর আরো ভীড় বাড়তে থাকে ক্রেতাদের। কেনাকাটা চলতে থাকে রাত ভর। চার তলা বিশিষ্ট এ মার্কেটে রয়েছে নারীদের দেশী বিদেশী পোশাকআশাকের বিশাল কালেশন। রয়েছে শিশুদের আধুনিক পোশাক ও জুতার সমাহার। দুই তলায় আছে জুয়েলারি এবং গোল্ডের দোকান। যদিও এ দোকানগুলোতে ছিল না ক্রেতা। তিন তলায় জুতা এবং চার তলায় টেইলার্সের দোকান রয়েছে। জুয়েলারি, কসমেটিকস, জুতার দোকানে সেভাবে ছিলনা বেচাবিক্রি। তবে কাজের ব্যস্ততা ছিল টেইলার্সের দোকানে।


মার্কেটের ব্যবসায়ীদের সাথে আলাপ করে জানা যায় বেচাবিক্রি ধীরে ধীরে জমে উঠেছে। মার্কেটটি এলিট সোসাইটির শপিংমল নামে পরিচিত হওয়ায় স্বল্প আয়ের মানুষ এ মার্কেটে আসে না বললেই চলে। আমদানি খরচ বেশি এবং বাইরে পোশাকের দাম বেড়ে যাওয়ার কারণে এবার পোশাকআশাকের দাম বেশি। যে কারণে পোশাকআশাকে ক্রেতাদের রুচির পরিবর্তন হয়েছে। তবে ঈদ কেনাকাটার দাম বেশি হলেও এ মার্কেটে পণ্যের মান খুব উন্নত।


কাকন’র স্বত্বাধিকারী ম. জাকির হোসেন বলেন, জমে উঠেছে ঈদের কেনাকাটা। আজ ছুটির দিনে আরো বেড়েছে বেচাবিক্রি। আশা করছি ১৫ রোজার পর বেচাবিক্রি আরো বাড়বে। এসময় তিনি আরো বলেন, এখন উচ্চবিত্তের ক্রেতারা দেশের বাইরে বিভিন্ন কারণে চলে যায়। সেই সুযোগে সেখানেই শপিং সেরে আসেন। অনেকে আবার ঈদ পূজায় শুধু শপিংয়ের লক্ষে পাশের দেশ ভারতে চলে যায়। একারণে এখন মিমি সুপার মার্কেটের ক্রেতা কমেছে।


পোশাক কারখানার কর্মকর্তা শাহিনুর রহমান তালুকদার বলেন, সপ্তাহিক ছুটি হওয়ায় পরিবার নিয়ে আজকে ঈদের কেনাকাটা করতে এসেছি। বাসা থেকে সোজা এখানে এসেছি। আর এখান থেকেই পুরো পরিবার ও আত্মীয়স্বজনদের জন্যও উপহারের পোশাক কিনে নিয়ে যাবো। রোজার দিনে এতো ঘুরাঘুরি করতে পারি না। জিনিসপত্রের দাম বেশি হলেও এখানে পণ্যের মান ভালো। যেকারণে এখানে আসি।


আঁচল’র কর্মকর্তা বরকত বলেন, আমাদের এক দামের দোকান। বেচাবিক্রি বেড়েছে। ক্রেতারা আসছে পোশাকও কিনছে। কিন্তু আগে ক্রেতারা বেশি দামের পোশাক কেনার যে প্রবণতা ছিল সেটি এখন কমে গেছে। অল্প ও মোটামুটি দামের মধ্যে পোশাক কেনাকাটা শেষ করেন।
বাচ্চাদের পোশাকের দোকান নিউ আকর্ষন। এখানে শিশুদের রেডিমেন্ট পোশাকের বেচাবিক্রি বেড়েছে। এসব পোশাকের মধ্যে গারারা, সারারা, আলেয়া, নায়ারা, জিন্স, টপ বিক্রি হচ্ছে। এ পোশাকগুলো বিক্রি হচ্ছে এক হাজার থেকে দশ হাজার টাকার মধ্যে।


রূপসী কর্মকর্তা এহসানুল করিম বলেন, আমাদের এখানে সেলাই ছাড়া মেয়েদের গাউন, টু-পিস, থ্রি-পিস, ফোর-পিসের অনেক কালেকশন আছে। ঈদ উপলক্ষে ইন্ডিয়া- পাকিস্থান থেকে অনেক নতুন নতুন কালেকশন আনা হয়েছে। বাংলাদেশি মেয়েদের মধ্যে এ দুই দেশে পোশাকের চাহিদা অনেক বেশি। তাই সব বয়সী নারীদের পোশাক আমাদের এখানে আছে। এখানের পোশাকগুলো ১৫শ’ টাকা থেকে ২০ হাজার টাকার বেশি দামেও রয়েছে।


মিমি সুপার মার্কেট ব্যকসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক এ কে এম আবদুল হান্নান আকবর বলেন, মিমি সুপার মার্কেটে ২৬৪টি দোকান রয়েছে। এখানে নারী,পুরুষ, শিশু, তরুণ-তরুণী এবং বয়স্ক সব শ্রেণির মানুষের প্রয়োজনীয় সব কিছুই রয়েছে। আসন্ন ঈদকে কেন্দ্র করে মিমি সুপার মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির পক্ষ থেকে ক্রেতাদের সুবিধাত্বে মার্কেট জুড়ে ৬৪টি সিসি ক্যামেরা ২৪ ঘন্টা চালু রাখা হয়েছে। ক্রেতাদের সুবিধাত্বে মার্কেটের বাইরে গাড়ি পার্কিংয়ের সুবিধা আগে থেকে থাকলেও এখন একটি সিস্টেম চালু করা হয়েছে ক্রেতাদের স্বার্থে। তাহলো পেপার্কিং সিস্টেম। এতে এখানে যারা শপিং করতে আসবেন তারাই শুধু গাড়ি রাখবেন। বাইরের কেউ গাড়ি রেখে ক্রেতাদের সমস্যা করতে পারছেন না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *