নজরুল ইসলাম ভুঁইয়া
বাংলা ভাষার রাষ্ট্রীয় মর্যাদার দাবীতে
সংগঠিত গণআন্দোলনই
ভাষা আন্দোলন।
পাকিস্তানি নেতৃত্ব বলছে
উর্দু হবে রাষ্ট্রভাষা
বাঙালিরা বলছে বাংলা,
এই নিয়ে শুরু হলো যে রণ
তাই ভাষা আন্দোলন।
পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় সরকার
বাংলার দাবীকে
উপেক্ষা করে বারবার।
বাংলার ছাত্র-বুদ্ধিজীবীরা ক্ষুব্ধ হয়ে
শুরু করেন ভাষা আন্দোলন,
দাবি করেন- কেন্দ্রীয়ভাবে
পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হোক দুটি
বাংলা ও উর্দু
তাও মানে নি পাকিস্তান
দাবি আদায়ে এবার বাঙালি
শুরু করেন আন্দোলন
ভাষা আন্দোলন।
ভাষার এ দাবিতে সর্বপ্রথম সংগঠিত
অধ্যাপক আবুল কাসেমের নেতৃত্বে
তমদ্দুন মজলিশের আন্দোলনই
ভাষা আন্দোলন।
তমদ্দুন মজলিসের আহ্বায়ক
অধ্যাপক নুরুল হক ভুঁইয়া
রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ’র আহ্বায়ক নিযুক্ত হন
করেন ভাষা আন্দোলন।
কুমিল্লার বাঙালি গণপরিষদ সদস্য
ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত
বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার
বিল উত্থাপনে ছিলেন মত্ত
তিনবার বিল করেছেন উত্থাপন
কিন্তু বার বার হয়েছেন ব্যর্থ!
বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার জন্য
ঢাবি ছাত্রনেতাদের নিয়ে গঠিত হয়
স্টুডেন্ট একশন কমিটি।
বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে
তাদের প্রথম ধর্মঘট আহবান
শুরু হলো ভাষা আন্দোলন।
ধর্মঘটের সমর্থনে হলো মিছিল
মিছিল থেকে শীর্ষ নেতারা গ্রেপ্তার হলেন।
আরও বেগমান হলো আন্দোলন-
ভাষা আন্দোলন।
ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে
মুহাম্মদ আলী জিন্নাহ ঘোষণা করেন
“উর্দুই হবে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা “
ঢাবির কার্জন হলে
অনুষ্ঠিত সমাবর্তনে
তিনি একই কথা পুনরাবৃত্তি করেন।
মওলানা ভাসানীর সভাপতিত্বে গঠিত হলো
‘সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ’।
অবশেষে চূড়ান্ত আন্দোলনের মাহেন্দ্রক্ষণে
২০ ফেব্রুয়ারি, ১৯৫২ সনে
ঢাকায় ১ মাসের জন্য ১৪৪ ধারা জারি করা হয়
আন্দোলন দমনে।
অন্যদিকে, ‘সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ’ নেতৃত্ব
১৪৪ ধারা ভঙ্গের পক্ষে-বিপক্ষে।
২১ ফেব্রুয়ারি, বাংলা ৮ই ফাল্গুন
ঢাবি কলা ভবনের সামনে আমতলায়
ছাত্রছাত্রীদের জমায়েত হয়
সবার মনে বিদ্রোহের আগুন।
১৪৪ ধারা ভঙ্গের সিদ্ধান্তে
পূর্ব বাংলা আইন পরিষদের দিকে
শুরু হয় মিছিল।
হঠাৎ মুহুর্মুহু গুলিবর্ষণ
রফিক, জব্বার, সালাম, বরকত শহীদ হন।
পরদিন মেডিকেল কলেজ প্রাঙ্গণে
নিহতদের স্মরণে
হয় গায়েবানা জানাজা,
আরও হয় শোকমিছিল।
শোকমিছিলে পুনরায় গুলিবর্ষণে
শহীদ হন শফিউর, অলিউল্লাহসহ ৪ জন।
এবার একইদিনে
বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বীকৃতির
প্রস্তাব পাশ হয় আইন পরিষদে,
সার্থকতা পায় আন্দোলন
আমার প্রাণের-অস্তিত্বের স্পন্দন
ভাষা আন্দোলন।
তারিখঃ বৃহস্পতিবার, ১৮ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ ইং।
৫ই ফাল্গুন, ১৪২৭ বঙ্গাব্দ।
৫ই রজব, ১৪৪২ হিজরী।