যুক্তরাষ্ট্র থেকে বেরিয়ে যেতে টেক্সাসে স্বাধীনতা আন্দোলন

নবযাত্রা ডেস্ক

যুক্তরাষ্ট্র থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে নতুন দেশ গড়তে চাইছে মার্কিন অঙ্গরাজ্য টেক্সাস। এক সময়ের স্বাধীন এ দেশটি আবারও ফিরে পেতে চাইছে তার হারানো মর্যাদা।

এখন থেকে ২০০ বছর আগেও একটি স্বাধীন দেশ ছিল টেক্সাস। ঊনবিংশ শতাব্দীতে এটি ছিল মেক্সিকোর একটি অংশ। ১৮৩৬ সালে টেক্সাস বিপ্লবের পর স্বাধীন ও সার্বভৌম দেশ হিসেবে জন্ম নেয় টেক্সাস। তার মাত্র ৯ বছর পর ২৮তম অঙ্গরাজ্য হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যুক্ত হয় এটি।

এখন স্থানীয় বাসিন্দাদের কেউ কেউ চাইছেন, টেক্সাস যেন আবারও স্বাধীন দেশের মর্যাদা ফিরে পায়। যুক্তরাষ্ট্র থেকে টেক্সাসের বিচ্ছিন্ন হওয়ার এই প্রক্রিয়াকে তারা নাম দিয়েছেন ‘টেক্সিট’। ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে যুক্তরাজ্যের বিচ্ছিন্ন হওয়ার প্রক্রিয়া ব্রেক্সিট থেকে উদ্বুদ্ধ হয়ে এমন নাম দিয়েছেন তারা। সম্প্রতি মেক্সিকো সীমান্ত দিয়ে বিপুল পরিমাণ অভিবাসনপ্রত্যাশী ঢুকে পড়া নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে বিরোধ বাড়ছে টেক্সাস প্রশাসনের। এর জেরেই আরও জোড়ালো হয়েছে স্বাধীন টেক্সিট আন্দোলন।

টেক্সাসের স্বাধীনতার দাবি করা টেক্সাস ন্যাশনালিস্ট মুভমেন্ট (টিএনএম) প্রেসিডেন্ট ড্যানিয়েল মিলার বার্তা সংস্থা এএফপিকে জানান, টেক্সাসের বাসিন্দারা জানে, সীমান্তকে নিরাপদ করতে এবং বিশ্বের অন্য ২০০টি দেশের মতো করে স্বাধীন দেশ হিসেবে গ্রহণযোগ্য অভিবাসন ব্যবস্থা গড়ে তোলার টেক্সিটই একমাত্র পথ। ২০০৫ সাল থেকে টেক্সাসের স্বাধীনতার দাবি জানিয়ে যাচ্ছেন মিলার।

স্বাধীনতাকামী এ নেতা জানান, টেক্সাস যুক্তরাষ্ট্রের অন্যান্য অংশের ইতিহাস এবং স্বার্থগুলোকে ধারণ করে। তবে স্পেনের কাতালান অঞ্চলের স্বাধীনতার দাবিদারদের মতো করে তারাও মনে করেন, কেন্দ্রীয় সরকার তাদের সমস্যাগুলো বোঝে না। টেক্সিট আন্দোলনের কর্মীরা অঙ্গরাজ্যটির আইন সভায় এমন একটি আইন পাস করতে চাইছেন, যার মাধ্যমে তারা যুক্তরাষ্ট্র থেকে আলাদা হওয়ার প্রশ্নে গণভোটের আয়োজন করতে পারবেন। যদিও মার্কিন সংবিধানে এমন সুযোগ নেই।

১৮৬১ সালে টেক্সাসসহ দক্ষিণাঞ্চলীয় অঙ্গরাজ্যগুলোর আলাদা হওয়ার উদ্যোগকে কেন্দ্র করে গৃহযুদ্ধ শুরু হয়েছিল। যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে সেটি ছিল সবচেয়ে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ। অঙ্গরাজ্যটির বাসিন্দারা মনে করেন তারা প্রথমত টেক্সান তারপর আমেরিকান। টেক্সাস বিশ্ববিদ্যালয়ের টেক্সাস পলিটিকস প্রজেক্টের এক জরিপে এমনটা দেখা যায়। যদিও চলতি মাসে নিউজ উইকের এক জরিপে দেখা গেছে, টেক্সাসের ৬৭ শতাংশ বাসিন্দা চায় অঙ্গরাজ্যটি যুক্তরাষ্ট্রের অংশ হিসেবেই থাকুক।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *