আইটি ডেস্ক
স্মার্টফোন বর্তমানে আমাদের দৈনন্দিন জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়া ব্রাউজিং থেকে অনলাইন কেনাকাটা সব ক্ষেত্রেই স্মার্ট ফোনের প্রয়োজনীয়তা লক্ষ্যণীয় মাত্রায় বেড়েছে। দীর্ঘ সময় ধরে ব্যবহার হয় বলে স্মার্টফোনের চার্জ দ্রুত শেষ হয়ে যায়। সাধারণত নতুন স্মার্টফোন দুই বছর ব্যবহারের পর থেকে ফোনের ব্যাটারির সক্ষমতা কমতে থাকে। এ ক্ষেত্রে নতুন ব্যাটারি কিনে নিতেই পারেন। তবে না কিনে যদি পুরোনো ব্যাটারি থেকেই বাড়তি সুবিধা পেতে চান, তবে নিচের আলোচনায় চোখ বুলিয়ে নিন ।
অধিক সময় ধরে মোবাইলে চার্জ ধরে রাখার কিছু উপায় নিয়ে নিচে আলোচনা করা হলো:
পাওয়ার সেভিং মুড : স্মার্টফোন ব্যবহারের সময় পাওয়ার সেভিং মুড অন রাখুন, এর ফলে অপ্রয়োজনীয় অ্যাপস আর ফাংশনগুলো বন্ধ হয়ে গিয়ে প্রয়োজনীয় অ্যাপস আর ফাংশনগুলো চলমান থাকবে।
ব্যাটারি সেভার মুড: স্মার্টফোনের ব্যাটারি সেভার মোড চালু করে নিতে পারেন। আইফোন ও অ্যান্ড্রয়েডচালিত বেশির ভাগ স্মার্টফোনে এই অপশন থাকে। কিছু ফোনে ব্যাটারির চার্জ ২০ শতাংশের নিচে নেমে গেলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে এই মোড চালু হয়ে যায়। ব্যাটারি সেভার মোড চালু রাখলে স্মার্টফোনের কেবল সাধারণ সুবিধাগুলোই পাওয়া যায়; কিন্তু ফোন চালু থাকে দীর্ঘ সময়।
ব্রাইটনেস কমানো : ফোনের ডিসপ্লে ব্রাইটনেস যতটা সম্ভব কমিয়ে রাখুন। অনেকেই অটো ব্রাইটনেস ব্যবহার করে চার্জ দ্রুত শেষ করে ফেলে। সুতরাং প্রয়োজন অনুযায়ী ব্রাইটনেস ব্যবহার করুন।
থার্ড পার্টি অ্যাপস : বিভিন্ন থার্ড পার্টি অ্যাপস চালু থাকায় ফোনের চার্জ দ্রুত শেষ হয়ে যায়। বিভিন্ন প্রয়োজনে থার্ড পার্টি অ্যাপস ব্যবহার করতে হলেও যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলা ভালো।
ব্যাকগ্রাউন্ড অ্যাপস : স্মার্টফোন অন করার পর থেকেই ব্যবহারকারীর অজান্তেই অনেক অ্যাপস ব্যাকগ্রাউন্ডে চলমান থাকে। এর ফলে চার্জ ক্ষয় হতে থাকে। তাই ব্যাকগ্রাউন্ডে চলমান অ্যাপসগুলো বন্ধ রাখুন।
অতিরিক্ত চার্জ না দেওয়া : অনেকেই চার্জ সম্পন্ন হওয়ার পরেও প্লাগ অন করে রাখেন, যা ব্যাটারির হেলথ ড্যামেজ করে ফেলে। চার্জ শেষ হওয়ার পর আনপ্লাগ করে ফেলুন।
ব্লুটুথ ও ওয়াই-ফাই অফ রাখা: অনেক সময় দেখা যায়, ব্যবহার না করা সত্ত্বেও স্মার্টফোনে চালু থাকে নেটওয়ার্ক। খেয়াল করে বন্ধ রাখবেন এগুলো। ব্যবহার না করেও ব্লুটুথ ও ওয়াই-ফাই নেটওয়ার্ক চালু রাখলে তা নতুন সংযোগ খোঁজার কাজটি চালাতে থাকে। এতে ব্যাটারির চার্জ নষ্ট হয়।
অ্যাপের বদলে ব্রাউজার দিয়ে ফেসবুক ব্যবহার : এখনকার স্মার্টফোনে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকের অ্যাপ্লিকেশন প্রি-ইনস্টল করা থাকে। এই অ্যাপটি কিছুদিন পরপর হালনাগাদও হয়। তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, ফেসবুকের এই অ্যাপে ব্যাটারির চার্জ বেশি খরচ হয়। তাই অ্যাপের বদলে ব্রাউজার দিয়ে ফেসবুক ব্যবহার করা ভালো। এতে বিদ্যুৎ খরচ কম হয়। ফলে ব্যাটারির চার্জ অপেক্ষাকৃত বেশি সময় ধরে থাকে।
লোকেশন ট্র্যাকিংঅফ রাখা: গুগল ম্যাপ বা আরও কিছু অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহারের জন্য ব্যবহারকারীর সঠিক অবস্থান জানার প্রয়োজন হয়। এ জন্য চালু রাখতে হয় লোকেশন ট্র্যাকিং। এতে বেশি চার্জ প্রয়োজন হয়। তাই যেসব অ্যাপ্লিকেশনে লোকেশন ট্র্যাকিংয়ের প্রয়োজন নেই, সেসব ক্ষেত্রে এই সুবিধা বন্ধ রাখা যেতে পারে। অ্যান্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেমের সেটিংসে গিয়ে লোকেশন ট্র্যাকিং বন্ধ করা যায়।
ভিজ্যুয়াল ইফেক্ট ও অ্যানিমেটেড ওয়ালপেপার অফ রাখা: স্মার্টফোনকে আকর্ষণীয় করে তুলতে বিভিন্ন ভিজ্যুয়াল ইফেক্ট ও অ্যানিমেটেড ওয়ালপেপারের জুড়ি নেই। কিন্তু এসব চালাতে ব্যাটারির চার্জও বেশি পোড়ে। যদি এগুলো বন্ধ রাখতে পারেন, তবে নির্দ্বিধায় একটু বেশি সময় মোবাইল চালু রাখতে পারবেন।
অটো আপডেট অফ রাখা: একটি স্মার্টফোনের ব্যাকগ্রাউন্ডে আরও অনেক অ্যাপ্লিকেশন চালু থাকে। এর মধ্যে একটি হলো বিভিন্ন অ্যাপের স্বয়ংক্রিয়ভাবে হালনাগাদ (অটো আপডেট) হওয়ার ব্যবস্থা। এটি বন্ধ রাখলে ব্যাটারির চার্জ খরচ কম হবে। অ্যান্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেমে চলা স্মার্টফোনের সেটিংসের জেনারেল অপশনে ঢুকে অটো আপডেট বন্ধ করা যাবে। আর হালনাগাদ করার প্রয়োজন হলে ম্যানুয়াল আপডেট করার সুযোগ তো থাকছেই।