নবযাত্রা প্রতিবেদক
‘ভোগ্যপণ্যের দাম বেশি হওয়ায় এবারের রোজায় একমাসের বাজার এক সাথে করছি না। দু-এক কেজি করে ১০ রোজা পর্যন্ত চলতে পারবে এমন পণ্য অল্পস্বল্প করে কিনছি। শেষ হলে আবার কিনবো। আগে আমার আয় দিয়ে ভালোভাবেই সংসার চলতো। কিন্তু বর্তমানে দ্রব্যমূলের যে দাম তার সাথে এখন পাল্লা দিতে পারছি না।’ কথাগুলো বলছিলেন পেশায় পত্রিকার হকার আজাদ মিয়া নামের এক ক্রেতা। শুধু তিনিই নয়, গতকাল নগরীর বাজারগুলো ঘুরে দেখা যায়, দ্রব্যমূল্যের এমন উর্ধ্বগামী দামের কারণে অনেক ক্রেতাই এক সাথে বাজার না করে ৭-১০ দিন চলবে এমন বাজারই করছেন।
আর দু’দিন পরই রোজা। তার আগে শেষ সময়ে রোজার প্রধান অনুসঙ্গগুলো কিনতে গতকাল নগরীর প্রায় সবগুলো বাজারে বেচা-কেনার হিড়িক শুরু হয়েছে। তবে কেনাকাটা করতে এসে নানা অভিযোগ করছে সাধারণ ক্রেতারা।
এদিকে বেশ কয়েক দিন ধরে নগরীর বৃহৎ পাইকারি বাজার চাক্তাই-খাতুনগঞ্জের ব্যবসায়ীরা বলছেন, পাইকারিতে কমেছে রোজার পণ্যের দাম। কিছু কিছু পণ্যে কেজিতে ৫-১০ টাকা পর্যন্ত দাম কমেছে। কিন্তু খুচরায় দেখা যাচ্ছে তার উল্টো চিত্র। খুচরায় আরো মাস দু-এক আগে যেসব পণ্যের দাম বেড়েছিল তা এখনো সেই দামেই বিক্রি হচ্ছে। এ বিষয় আবার খুচরা ব্যবসায়ীরা দেখাচ্ছে নানা যুক্তি।
কর্ণফুলী বাজারের ব্যবসায়ী নাছির বলছেল, ব্যবসায়ীরা রোজার দু’এক মাস আগে থেকেই দোকানে পণ্য তুলে। তখন যে দামে কেনা হয়েছে সেই দামেই আমরা বিক্রি করছি। দাম কমলে আমরাও কমিয়ে রাখছি। কারণ এখন ক্রেতারা অনেক সচেতন। চাইলেই তাদের ঠকানো যায় না।
গতকাল কর্ণফুলীতে প্রতিকেজি ছোলা মানভেদে বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ৮৫ টাকায়। ভোজ্যতেল বোতলজাত কোম্পানি ভেদে বিক্রি হচ্ছে ১৭০ থেকে ১৮০ টাকায়। খোলা ও প্যাকেটজাতের চিনি বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ৮৫ টাকায়। মসুর ডাল বিক্রি হচ্ছে মানভেদে ১১০-১৩০ টাকায়। বিভিন্ন জাতের খেজুর মানভেদে বিক্রি হচ্ছে কেজিতে প্রায় ২০০-১২০০ টাকায়। মুুড়ি মানভেদে ৭০-৭৫ টাকায় ও ছিড়া ৭০-৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। একইভাবে চড়া শরবতের জন্য বিভিন্ন ব্র্যান্ডের ট্রাংয়ের দাম।
চলতি সপ্তাহে ব্রয়লার মুরগি কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ১৬০ টাকায়। লেয়ার ও সোনালী মুরগি আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে। লেয়ার বিক্রি হচ্ছে ২৬০ টাকায় ও সোনালী ৩১০ টাকায়। বাজারে পোল্টি ব্যবসায়ীর বলছেন, একদিন পর থেকে আরো বাড়বে মুরগির দাম। এদিকে এখনো চড়া মাছের বাজার। তবে বাজারে সবরকম ভোজ্যপণ্যের দাম এখনো লাগামহীন হলেও কিছুটা স্বস্থি ফিরেছে সবজির বাজারে। বাজারে সবজি মিলছে ২০-৪০ টাকার মধ্যে। কিন্তু এখনো বারোমাসি সবজি বরবটি, তিতাকরলা, ঢেডসের দাম এখনো ৫০-৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।